নিজস্ব প্রতিবেদক:
নানান দূর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম আর অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারি ও শিশুদের সাথে দূর্বব্যবহারের কারনে অতিষ্ঠ হয়ে তার বিরুদ্ধে শহরে হয় মানববন্ধন, মানববন্ধনের খবর প্রকাশিত হয় স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। কিন্তু এসবের পর ৩ মাস পার হলেও ঐ দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা বলছেন, তার খুঁটির জোর অনেক, দূর্নীতি প্রমান হলেও তাকে সরানো সম্ভব নয় ! তার উর্ধতন কর্মকর্তার তিনি প্রিয়ভাজন এবং অনিয়ম করা টাকার একটা ভাগ চলে যায় উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে ভালবাসার প্রতিদান হিসেবে ৷ অফিস থেকে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত রয়েছে সিন্ডিকেট। তিনি সেই সিন্ডিকেটের অন্যতম। সিন্ডকেটটি আওয়ামী শাসন আমলে তৈরী হলেও, এখনও রয়েছে বহাল, আগের নিয়মেই চলছে তাদের কার্যক্রম।
রাজশাহীর বহুল আলোচিত সেই কর্মকর্তার নাম কামাল উদ্দীন চৌধুরী। তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত রাজশাহীর সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র’র উপ-প্রকল্প পরিচালক। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দেখেন টাঙ্গাইলের সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র। দুটি অফিস থাকার সুবাদে তাকে পাওয়া যায়না কোন অফিসেই। এক অফিসে খুঁজলে জানা যায় অন্য অফিসে আছেন তিনি।
সম্প্রতি নগরীর উপশহর এলাকার আব্দুর রহিম নামে এক ব্যক্তি “উপ-প্রকল্প পরিচালক, কামাল উদ্দীন চৌধুরী’র অনিয়ম দুর্নীতির ব্যবস্থা গ্রহণ ও অসহায় শিশুদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকরণ” বিষয় উল্লেখ করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করেন। আবেদনের কপি পাঠান সচিব, মহাপরিচালক-সহ গুরুত্বপূর্ণ পদের ব্যক্তি ও রাজশাহীতে কর্মরত বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, রাজশাহীর দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ- প্রকল্প পরিচালক, মোঃ কামাল উদ্দীন চৌধুরী, এতিম শিশুদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও খেলাধুলার উপকরণের টাকা আত্নসাৎ করে নিজের পকেট ভরছেন। অফিসের অন্যান্য মালামাল ক্রয়েও রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতি। যা পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার উপরে মালামাল সরবরাহকারী ঠিকাদারেরনসাথে সাথে যোগাযোগ করলে প্রমান মিলবে। এছাড়া তার নিকট আত্মীয়দের দিয়ে মালামাল সরবরাহ করিয়ে থাকেন বলেও জানা গেছে। তিনি অফিস স্টাফদের সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং বদলির হুমকি দেন। তিনি অফিসে নিয়মিত আসেন না এবং আসলেও দেরি করে আসেন। এ বিষয়ে আগে উর্ধতনদের জানানো হলেও কোন তদন্ত হয়নি। পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালকের সাথে সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির কোন তদন্ত হয় না।
সম্প্রতি রাজশাহীর সামিরা সালুরা এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্যাডে শিশুদের জন্য বরাদ্দ পোশাকের ৭ লক্ষ ১৯ হাজার টাকার একটা বিল পাওয়া যায়। সেখানে প্রোপ্রাইটরের নাম লেখা আছে সাবিনা ইয়াসমিন, দেয়া আছে ফোন নম্বর। সেই নম্বরে ফোন দিলে তিনি বলেন, তিনি সাবিনা ইয়াসমিন। তবে এই বিল সংক্রান্ত কোন বিষয় তার জানা নাই বলে তিনি জানান।
এসব বিষয়ে কথা বললে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপ- প্রকল্প পরিচালক কামাল উদ্দীন চৌধুরী বলেন, এসব অভিযোগের কোন সত্যতা নাই। কিছু মানুষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও আমার উর্ধতনদের কাছে ভুল তথ্য জানাচ্ছে। আমার উর্ধতনরা এগুলো জানেন, তারা আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগের সত্যতা পান নাই।
সমাজসেবা অধিদপ্তর রাজশাহীর উপ-পরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, এরকম অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে ৷ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় হবে।
প্রযুক্তি সহায়তায়: VantageSoftGlobal
Leave a Reply