দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন চট্টগ্রামের আজিম ও মানিকগঞ্জের বৃষ্টি। এই যুগল নিয়মিত নিজেরা ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটে আপলোড করতেন। শুধু তাই নয়, অন্যদেরও এই কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল ভোর সাড়ে ৩টার দিকে বান্দরবানের হাজীপাড়া এলাকার বালাঘাটা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো প্ল্যাটফর্মে তাদের প্রথম ভিডিও প্রকাশিত হয়। তারপর থেকে গত এক বছরে তারা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যা দেখা হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৬৭ লাখ বার। এই বিপুল দর্শকসংখ্যার সুবাদে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্নো তারকাদের পারফর্ম্যান্স র্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান এখন অষ্টম।
জসীম উদ্দিন আরও জানান, এই যুগল শুধু নিজেরা নয়, অন্যদেরও প্রলুব্ধ করতেন একই পথে আসতে। টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে তারা ‘নতুন ক্রিয়েটর’ খুঁজে বের করতেন। টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতেন—“নতুন ক্রিয়েটর এড করলে নগদ টাকা”—এইভাবে তরুণ-তরুণীদের প্ররোচিত করতেন।
তিনি বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে পর্নো ভিডিও তৈরি ও ছড়ানো ছাড়াও আরও মানুষকে এ কাজে যুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি সামাজিক ও নৈতিকভাবে গভীর উদ্বেগজনক।”
সিআইডির কর্মকর্তা জানান, অনলাইনে পাওয়া তাদের বিভিন্ন ছবিতে বিলাসবহুল জীবনযাপনের চিত্র দেখা গেলেও, বাস্তবে তারা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারা তরুণ-তরুণী।
এক প্রশ্নের জবাবে জসীম উদ্দিন বলেন, “অনলাইন জগৎ সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ কঠিন। তবে তাদের প্রকাশিত ১১২টি ভিডিও যাতে বাংলাদেশ থেকে আর দেখা না যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এই কর্মকাণ্ড থেকে তারা কত অর্থ আয় করেছেন এবং কীভাবে সেই অর্থ দেশে এনেছেন—তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। পাশাপাশি, যাদের নতুন করে যুক্ত করেছেন, তাদের অর্থনৈতিক লেনদেন ও যোগাযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুহাম্মদ আজিম বান্দরবান শহরের বালাঘাটা এলাকায় ফল ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে চলতি মাসের ১২ অক্টোবর ১০ হাজার টাকায় একটি বহুতল ভবনে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। ভবনের তত্ত্বাবধায়ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন এবং খুব একটা বাইরে যেতেন না।
সিআইডি বলছে, এই দম্পতির কার্যক্রম দেশের নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধে মারাত্মক আঘাত হেনেছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হবে।
প্রযুক্তি সহায়তায়: VantageSoftGlobal
Leave a Reply